বুধবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৯, ০৮:৫১ পূর্বাহ্ন
মির্জা বদরুজ্জামান টুনু যশোর
যশোরে পিস্তল ওয়ারলেস হাকস্টিক নিয়ে পুলিশ পরিচয় দিয়ে ফিল্মি স্টাইলে একের পর এক ছিনতাই ঘটনায় আতংক বাড়ছে। ঘটনা ঘটলেও কেউ আটক না হওয়ায় হতাশা ও ব্যক্ত করছেন ভ‚ক্তভোগীরা। পুলিশের ভাবম‚র্তি ক্ষুন্ন করতে কোনো সংঘবদ্ধ চক্র এই ছিনতাই করছে দাবি করে থানার অফিসার ইনচার্জ জানিয়েছেন, নানামুখি কৌশলী অভিযান চলছে চক্রটিকে পাকড়াও করতে পুলিশ সেজে চলা ওই চক্রের কাউকে ধরিয়ে দিলে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে। এদিকে এ ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা শাখা মাঠে নামছে বলে নিশ্চিৎ করেছেন গোয়েন্দা ওসি। সব মিলিয়ে এ ইস্যুতে পুলিশ প্রশাসন এখন হার্ডলাইনে। গত ২৭ জানুয়ারি সরকারি এমএম কলেজের ক্যামিস্ট্রি প্রথম বর্ষের ছাত্র ও বিবর্তন কলেজ শাখার সভাপতি আনন্দ কুমার সরকারের কাছ থেকে কাঠেরপোল এলাকায় পুলিশ পরিচয় দিয়ে ছিনতাই করা হয়। ইয়াবা আছে কিনা চেক করার নামে মুখ খাপ্পড় মেরে (বø বিভো জিরো ফাইভ ও স্যামস্যাং জেট-টু) দুটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। এছাড়া পলিটেকনিক কলেজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনের রাস্তা থেকে কম্পিউটার বিভাগের ছাত্র সুমন মন্ডলের গতিরোধ করে দুটি ল্যাপটপ নিয়ে নেয় তারা। শহরের পালবাড়ী মোড়ে পুলিশ পরিচয় দেয়া ওই চক্রটি হোটেল কর্মচারী সাকিলের গতিরোধ করে একটি সাওমি মোবাইল ফোন সেট ছিনতাই করে। তারা ওই দিনেই থানায় এসে জড়ো হয়ে অভিযোগ করে। এ ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয় পুলিশ প্রশাসনে। উপর মহল থেকে থানায় নির্দেশনা দেয়া হয় পুলিশের কেউ ওই ঘটনায় জড়িত কিনা দ্রæত খতিয়ে দেখতে। বর্ণনা অনুযায়ী, পুলিশ সদস্যদের মিল খোঁজা শুরু হয়। এছাড়া থানার ইন্সপেক্টর অপারেশন এ ব্যাপারে মাঠে নামেন নানামুখি প্রযুক্তি নিয়ে। শহরের কয়েকটি সড়কে সিসি টিভি ফুটেজ থেকে তিনি জড়িতদের ছবিও সংগ্রহ করেন। তবে কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। এরইমধ্যে ৩০ জানুয়ারি থানায় অভিযোগ আসে, বেজপাড়া মেইন রোডের মাহফুজ আহমেদ প্রিন্স নামে যশোর সিটি কলেজের এক ছাত্রের কাছ থেকেও পুলিশ পরিচয়ে হু আই মোবাইল সেট নিয়ে গেছে। এরপর ২ ফেব্রæয়ারী যশোর পুলিশ পরিচয়ে ফিল্মি স্টাইলে আবারও দুটি স্পট থেকে মোবাইল ছিনতাই ঘটনা ঘটে।
এ দিন বিকেলে যশোর আইটি পার্ক মোড় ও ডিসি বাংলো রোড থেকে ৩ কলেজ ছাত্র কে দাড় করিয়ে কৌশলে ৩ টি দামি মোবাইল সেট ছিনতাই করা হয়। মাজায় পিস্তল, ওয়ারলেস আর হাতে হকিষ্টিক সেই পুলিশ সেজে চলা চক্র। এদিন বিকেলে সরকারি এম এম কলেজের ছাত্র অর্ঘ্য মন্ডল, যশোর ষ্টেডিয়ামেপাড়ার নাফিজ ইমরান ও বাউলিয়া এলাকার শাহিন আলম থানায় অভিযোগ দেন। কয়েক দিনের ব্যবধানে পুলিশ পরিচয়ে খোদ যশোর শহরে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনায় রীতিমত বিব্রতকর পরিস্থিাতিতে পড়েছে পুলিশ প্রশাসন। ওই চক্রকে ধরতে কয়েকটি সিভিল টিম সহ আরও কয়েকটি ইউনিট কাজ করছে। যেকোনো ম‚ল্যে ওই চক্রকে আটক করতে নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন থানায় সিসি টিভি ফুটেজের ছবি পাঠানো হয়েছে। বিভিন্ন পুলিশ টিমের হাতে হাতে ছবি ধরিয়ে দেয়া হয়েছে ওই পুলিশ সেজে চলা চক্রকে পাকড়াও করতে। এদিকে কলেজ ছাত্ররা আধুনিক ভার্সনের মোবাইল ও ল্যাপটপ সেট ব্যবহার করায় ওই চক্রটি ছাত্রদের টার্গেট করে ছিনতাই করায় আতংক বাড়ছে। হতাশা ব্যক্ত করেছেন ভুক্তভোগী কয়েকজনের পরিবার । এ ব্যাপারে থানায় অফিসার ইনচার্জ অপ‚র্ব হাসান গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, ঘটনাগুলো খুবই দুঃখজনক। চক্রটি পুলিশের ভাবম‚র্তি যেমন নষ্ট করার চেষ্টা করছে, তেমনি নিজেরাও ভয়ংকর পথে চলছে। দ্রæত ওই চক্রের লাগাম টানতে মাঠে নেমেছে পুুলিশ। এছাড়া যদি কেউ চক্রের কাউকে ধরিয়ে দেন তাহলে তাকে ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেয়া হবে।
জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ মারুফ আহমেদ গ্রামের কাগজকে জানিয়েছেন, যেসব স্পটে চক্রটি ঘটনাগুলো ঘটিয়েছে সেখানে টহল জোরদার করা হচ্ছে। ডিবির কয়েকটি টিম কাজ করছে।দ্রুতই তারা আটক হবে বলেও দাবি তার।
Leave a Reply